মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বি এম আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ২০০৯ সালে রাজৈর সমাজসেবা অফিসে যোগদান করে বিভিন্ন ধরনের অন্যায়, অত্যাচার, অর্থ আত্মসাত ও অধিনস্তদের সাথে অশুভ আচরন করে আসছেন। বিভিন্ন সময়ে বয়স্ক ভাতা ,বিধবা ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা আত্মসাত করে প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছেন। বর্তমানে তিনি মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকায় ১০ শতাংশ জমির উপর ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মান করছেন। তিনি রাজৈর পুরাতন সমাজসেবা অফিসের প্রায় ৩ বান্ডিল টিন নিজের বাড়ীতে নিয়ে রান্নাঘর নির্মান করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। রাজৈর সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হাবিবুর রহমানের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বি এম আসাদুজ্জামান রাজৈর অফিসে যোগদানের পর থেকেই প্রতিমাসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে অফেরৎযোগ্য ধার নিয়ে থাকেন। বাড়ী করার সময় খালিয়া ইউনিয়নের ২টি গ্রামে ঋণের স্কীম দেখাইয়া ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে নেন। পরে ২ বছর পর এই টাকা ফেরৎ দিলেও সার্ভিস চার্জের ৪০ হাজার টাকা দেননি। ২০১৫ সালে প্রকল্পের ৬০ হাজার টাকা, ২০১৬ সালে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আর ফেরৎ দেননি। ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থেকে ৪ লক্ষ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে কবিরাজপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন মিঠু নামে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর স্বাক্ষর করা সিট ছিড়ে ফেলে তার মনোনয়ন বাতিল করে দেন। ২০১৭ সালে ইউপি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থেকে ২ ইউনিয়নের প্রায় সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামের হতদরিদ্র , বয়স্ক ও বিধবারা ভাতা নিতে এসে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে রাজৈর সোনালী ব্যাংকে এসে গ্রাহকরা ভাতা না পেয়ে রাজৈর পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ জানায়। মেয়র শামীম নেওয়াজ তাদেরকে সাথে নিয়ে ব্যাংকে যায় এবং ভাতা না পাওয়ার কারন জানতে চায়। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তারা সমাজসেবা অফিসকে দায়ী করে। এছাড়াও অগ্রনী ব্যাংক টেকেরহাট শাখায় সমাজসেবা অফিসারের যোগসাজসে অবৈধভাবে ভাতা বিতরন করা হয়। পরবর্তীতে ভাতা নিতে এসে ৪২ জন গ্রাহক ভাতা বঞ্চিত হয়।
শরীয়তপুর সমাজসেবা অফিসে চাকরীরত অবস্থায় ২০০৮ সালে সমাজসেবা অফিসের বাগান থেকে ১লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যমানের ২১ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কাটার অভিযোগে বি এম আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল।
সম্প্রতি তাকে রাজবাড়ী সদরে বদলির আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মাদারীপুর জেলায় থাকার জন্য তিনি জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাজৈর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বি এম আসাদুজ্জামান জানান, এ গুলো সব মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমার অফিসের কিছু অসাধু লোক আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ দিয়েছে।